মো: জাকির হোসেন :
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিমসিংহ এলাকার অটোরিক্সা চালক নাজমুল হক (২০) হত্যার ঘটনায় পুলিশ বৃহস্পতিবার ঘাতক ইব্রাহিম খলিল উল্ল্যাহ (৩২) ও মোঃ নবী (৪৮) কে গ্রেফতার করেছে। এসময় ছিনতাই হওয়া অটোরিক্সাটিও উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত ১৫ মার্চ উল্লোখিত ঘাতকরা যাত্রীবেশে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে নাজমুলকে হত্যা করে লাশ বুড়িচং উপজেলার কংশনগর এলাকায় গোমতী নদীর তীরে ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল।
বুড়িচং থানা সুত্র জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের পশ্চিমসিংহ এলাকার অটোরিক্সা চালক নাজমুল হক গত ১৪ মার্চ সকাল আনুমানিক ৬ টায় প্রতিদিনের মতো তার অটোরিক্সা নিয়ে বের হয়। পরবর্তীতে সে বাড়িতে না ফেরায় বিভিন্নভাবে খোঁজাখুজিসহ মােবাইল ফোন বন্ধ থাকায় নিহতের মা সাফিয়া বেগম বুড়িচং থানায় একটি নিখোজ ডায়েরী করেন। ১৫ মার্চ বিকাল সাড়ে ৫ টায় বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বুড়িচং-কংশনগর সড়কের এমএ আজাদ নামের এক ব্যক্তির বাড়ির পশ্চিম পার্শ্ব গোমতী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ভিতর একটি বাঁশঝাড়ের নীচে সাদা প্লাষ্টিকের বস্তার ভিতর অজ্ঞাতনামা লাশের সন্ধান পেয়ে স্থানীয়রা বুড়িচং থানায় খবর দেয়। এসময় বুড়িচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মােজাম্মেল হক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমন, পিপিএমসহ উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিন হন। খবরটি সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার হলে নিহতের মা সাফিয়া বেগমও ছুটে আসেন । তখন পড়নে থাকা কাপড় দেখে মা সন্তানের লাশ বলে সনাক্ত করেন। এঘটনায় ১৬ মার্চ নিহতের মা সাফিয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী উল্লেখ করে বুড়িচং থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক পিপিএম এর নেতৃত্বে দেবপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ সাজ্জাদ হোসেন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বুড়িচং থানার দেবপুর ফাঁড়ির এসআই নন্দন চন্দ্র সরকার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে টানা অভিযান চালিয়ে ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় একই উপজেলার নিমসার এলাকা থেকে বুড়িচং উপজেলার জগতপুর গ্রামের বর্তমান নিমসার এলাকার বীজ ভান্ডার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক শাহ আলমের ভাড়াটিয়া মৃত আঃ রশিদের পুত্র ইব্রাহিম খলিল উল্ল্যাহকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই দিন রাত ১১ টায় একই উপজেলার পাঁচোড়া গ্রাম থেকে অপর ঘাতক নবীকে আটকসহ তার দখলে থাকা নিহতের অটোরিক্সাটি উদ্ধার করে। আটককৃত ঘাতকদ্বয় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ১৪ মার্চ ভারেল্লা বাজার থেকে মালামাল পরিবর্তনের কথা বলে নাজমুলকে নিমসার এলাকার মাদবপুর গ্রামে কুহিনুর আক্তার (বাবুর ভাড়াটিয়া) বাসায় নিয়ে যায়। সেখান তাকে ফ্রুটো জুসের সাথে ডিসোপ্যান-২ নামক ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে ব্লেড দিয়ে গলা কেটপ হত্যা করে বস্তায় ভরে লাশ গোমতীর তীরে ফেলে অটোরিক্সা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে অটোরিক্সাটি ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে ।